কাজাখস্তান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরির ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে কাজাখস্তানে অবস্থিত কোম্পানি অথবা নিয়োগকর্তা প্রদত্ত চাকরির প্রস্তাব পেতে হবে।
অতঃপর নিয়োগকর্তার মাধ্যমে স্থানীয় শ্রম অধিদপ্তরে আপনার কাজ করার অনুমতির লক্ষ্যে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে।
আবেদন করার পর কাজাখস্তান কাজের অনুমতি পেলে কাজাখস্তান কনস্যুলেট বা দূতাবাসের মাধ্যমে কাজাখস্তান ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে বৈধ পাসপোর্ট সহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস থাকতে হবে। অতঃপর ভিসা প্রক্রিয়া শেষে আপনাকে কাজাখস্তান প্রবেশ এবং কাজের অনুমতি দেওয়া হবে।
কাজাখস্তান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
কাজাখস্তান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরিতে প্রাথমিক ভাবে ন্যূনতম ১২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৯ হাজার টাকা পর্যন্ত আবেদন ফি প্রদান করতে হয়।
তবে দূতাবাসের নিয়ম অনুযায়ী আবেদন ফি ন্যূনতম প্রায় ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
এছাড়া আবেদন ফি এবং যাবতীয় সকল খরচ মিলিয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরিতে ন্যূনতম প্রায় ৪ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
তবে সরকারি ভাবে ন্যূনতম প্রায় ৩০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত কম খরচে কাজাখস্তানের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি করা যায়।
কাজাখস্তান ভিসা আবেদন
বর্তমানে কাজাখস্তান ভিসা আবেদন করার ক্ষেত্রে কাজাখস্তানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে প্রাথমিক ভাবে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
অতঃপর প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সঠিক ভাবে প্রদানের মাধ্যমে আবেদন ফি পরিশোধ করে প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস ভিসা অফিসে জমা দিয়ে আবেদন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
কাজাখস্তান ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহ-
- পর্যাপ্ত খালি পৃষ্ঠা যুক্ত বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট। (মেয়াদ নূন্যতম ৬ মাস থাকতে হবে)
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এবং মেডিকেল রিপোর্ট প্রয়োজন হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং ন্যূনতম ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত এয়ারলাইন্সের বিমান টিকেটের ফটোকপি।
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি এবং শিক্ষাগত ও ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণ ইত্যাদি।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কাজাখস্তান দূতাবাস বা এজেন্সি অনুযায়ী কাজাখস্তান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরির কাগজপত্র পরিবর্তিত হতে পারে। এক্ষেত্রে কাজাখস্তান দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে।
কাজাখস্তান ভিসা চেক
বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে কাজাখস্তান ভিসা চেক করা যায়। এছাড়াও অফলাইনে কাজাখস্তান দূতাবাসে সরাসরি উপস্থিত হয়ে কাজাখস্তান ভিসা চেক করা যায়।
অপর দিকে অ্যাপসের মাধ্যমে কাজাখস্তান ভিসা চেক করার জন্য গুগল ক্রোম ব্রাউজার থেকে আমি প্রবাসী (ami probashi) অ্যাপসটি ইন্সটল করে ওপেন করতে হবে।
অতঃপর আমি প্রবাসী অ্যাপসে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। একাউন্ট তৈরি করে নিচে ভিসা যাচাইকরণ (visa check) অপশনে ক্লিক করতে হবে।
অতঃপর প্রয়োজনীয় সকল তথ্য প্রদানের মাধ্যমে কাজাখস্তান সহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশের ভিসা চেক করা যায়। তবে দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ভিন্ন হতে পারে।
কাজাখস্তান যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে কাজাখস্তান যেতে বিমান ভাড়া বাবদ টিকেটের ক্যাটাগরি অনুযায়ী ন্যূনতম প্রায় ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
এছাড়া ভিসা তৈরি এবং আনুষাঙ্গিক সকল ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতে ন্যূনতম প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
অর্থাৎ সকল খরচ মিলিয়ে বাংলাদেশ থেকে কাজাখস্তান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে নূন্যতম প্রায় ৬ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
তবে অফ সিজনে এবং ভ্রমণের ন্যূনতম ১ মাস পূর্বে বিমানের টিকেট ক্রয় করলে কাজাখস্তান যেতে ন্যূনতম প্রায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় হয়ে থাকে।
কাজাখস্তান যেতে বয়স কত লাগে
বর্তমানে কাজাখস্তান সকল বয়সের ব্যক্তি যেতে পারে। তবে ভিসার ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে কিছু ক্ষেত্রে বয়সের নীতিমালা রয়েছে। যেমন-
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার সাহায্যে কাজের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে কাজাখস্তান যেতে ন্যূনতম বয়স ১৮ বছরের বেশি বা ২১ বছর বয়স থাকতে হয়।
তবে টুরিস্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা এবং ফ্যামিলি ভিসার সাহায্যে যে কোন বয়সের ব্যক্তি কাজাখস্তান যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে অভিভাবকের অনুমতিপত্র প্রয়োজন হবে।
শেষ কথা
প্রতিনিয়ত কাজাখস্তান ভিসার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্বের তুলনায় বর্তমানে কাজাখস্তান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরির খরচ সর্বনিম্ন প্রায় ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১২ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ প্রায় ১৫ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ধন্যবাদ।
FAQs (Frequently Asked Questions)
কাজাখস্তান যেতে কত সময় লাগে?
ট্রানজিটের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ থেকে কাজাখস্তান যেতে ন্যূনতম ৭ ঘন্টা থেকে ১৬ ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
কাজাখস্তানে কাজের ভিসা কীভাবে পাবো?
প্রথমত নিয়োগকর্তার নিকট থেকে ওয়ার্ক পারমিট লাভ করে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
কাজাখস্তান বেতন কত?
কাজের ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে কাজাখস্তান বেতন ন্যূনতম প্রায় ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
কাজাখস্তানে কাজের ভিসা পেতে কত সময় লাগে?
সকল কাগজপত্র সঠিক ভাবে জমা দিলে কাজাখস্তানে কাজের ভিসা পেতে প্রায় ২ সপ্তাহ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগে।
কাজাখস্তানের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর উপায় কি?
এক্ষেত্রে কাজাখস্তান ইমিগ্রেশন অফিসের মাধ্যমে ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করতে হবে।
কাজাখস্তান কাজের ভিসা কতদিনের জন্য দেওয়া হয়?
সাধারণত কাজের ক্যাটাগরি অনুযায়ী ১ বছর থেকে শুরু করে ৩ বছরের মেয়াদে কাজাখস্তান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রদান করা হয়ে থাকে।