বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক রুট কয়টি ও কি কি

বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক রুট কয়টি এই প্রশ্নটির উত্তর হল বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান প্রায় ২১ টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে। রুট গুলো হল-

দক্ষিণ এশিয়ার ভারত (দিল্লি ও কলকাতা) নেপাল (কাঠমান্ডু) এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া (কুয়ালালামপুর) সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ড (ব্যাংকক)।

অপর দিকে বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক রুট কয়টি তা পূর্ব এশিয়ারর ক্ষেত্রে চীন (গুয়াংজু) জাপান (নারীতা) এবং ইউরোপের যুক্তরাজ্য (লন্ডন ও ম্যানচেস্টার) উত্তর আমেরিকার কানাডা (টরেন্ট)।

এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষেত্রে কুয়েত, ওমান (মাস্কাট) কাতার (দোহা) এবং সৌদি আরবের ( জেদ্দা, মদিনা, রিয়াদ ও দাম্মাম) এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ( দুবাই, আবুধাবি ও শারজাহ)।

বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক রুট কয়টি

বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক রুট কয়টি তা যে কোনো মুহূর্তে পরিবর্তিত হতে পারে। কেননা বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক রুট বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা চলছে।

মূলত বাংলাদেশ বিমানের কিছু লাভজনক রুট রয়েছে। যেমন- লন্ডন, টরন্টো ও দুবাই, জেদ্দা, মদিনা এবং রিয়াদ, দাম্মাম, ব্যাংকক ও কাঠমান্ডু, কুয়ালালামপুর এবং সিঙ্গাপুর।

এছাড়া কিছু রুটে বাংলাদেশ বিমান লসের সম্মুখীন হচ্ছে। যেমন- ম্যানচেস্টার ও কুয়েত সহ দিল্লি, কলকাতা, গুয়াংজু ও নারিতা ইত্যাদি।

সাধারণত এই অলাভজনক রুট গুলোতে ফ্লাইট এর পরিমাণ কমিয়ে আন্তর্জাতিক রুট বৃদ্ধি করে নতুন রুটে ফ্লাইট পরিচালনার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হয় কত সালে

বাংলাদেশ বিমান প্রতিষ্ঠার পর সর্বপ্রথম ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে। বাংলাদেশ বিমানের প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট টি ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

সর্বপ্রথম ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ বাংলাদেশ বিমান আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বের সাথে সংযুক্ত করে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরে।

মূলত ঢাকায় অবস্থানরত DC-10 বিমানের সাহায্যে প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়। যা পরবর্তীতে প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হতে থাকে। যেমন-

লন্ডনের পর বাংলাদেশের সব থেকে বড় সীমান্তবর্তী প্রতিবেশী দেশ ভারতের কলকাতায় এবং এরপরের ফ্লাইটটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ ব্যাংককের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছিল।

বাংলাদেশের প্রথম বিমান চালু হয় কত সালে

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশ সরকার বিমান উত্তোলনের সাহসী পদক্ষেপ নেয়। মূলত বিমান উত্তোলনের এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ভাবে পরিচিত করা।

সর্বপ্রথম মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমান বাংলাদেশ এভিয়েশন শিল্পের ভিত্তি স্থাপন করে যা একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।

পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নামে বাংলাদেশ বিমান আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। যা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বাহি বিমান সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স DC-3 বিমানের সাহায্যে সর্বপ্রথম ঢাকা টু চট্টগ্রাম এবং পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ ঢাকা টু লন্ডন আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে।

বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক সময়সূচি

বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২টি এবং প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৮৩ টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে। নিচে কয়েকটি ফ্লাইটের আন্তর্জাতিক সময়সূচি দেওয়া হল-

গন্তব্যফ্লাইট নংফ্লাইটের সময়ফ্লাইটের সময়কাল
ঢাকা থেকে লন্ডন(BG-001)উড্ডয়ন সময় সকাল ১০:১০

অবতরণ সময় বিকেল ৪:২৫

প্রায় ১০ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
ঢাকা থেকে দুবাই(BG-047)উড্ডয়ন সময় রাত ৬:৩০

অবতরণ সময় রাত ৯:৩০

প্রায় ৫ ঘণ্টা।
ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর(BG-084)উড্ডয়ন সময় সকাল ৮:৩০

অবতরণ সময় দুপুর ২:১৫

প্রায় ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট।
ঢাকা থেকে টরন্টো(BG-305)উড্ডয়ন সময় সকাল ৩:৩০

অবতরণ সময় দুপুর ১:৩০

প্রায় ১৬ ঘণ্টা

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আবহাওয়া এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফ্লাইটের সময়সূচী পরিবর্তিত হতে পারে। তাই সঠিক সময়সূচী জানতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর কয়টি

বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বমোট প্রায় ৩ টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। বিমানবন্দরগুলো বহির্বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

১. ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-

  • ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাংলাদেশের সব থেকে বড় এবং ব্যস্ত বিমানবন্দর।

২. চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-

  • শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পটিয়া উপজেলার কাছে অবস্থিত।

৩. সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-

  • ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা এলাকায় অবস্থিত।

এছাড়াও বাংলাদেশের আরো কয়েকটি বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। যেমন- কক্সবাজার বিমানবন্দর এবং যশোর বিমানবন্দর।

শেষ কথা

বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক রুট কয়টি তা অতি শীঘ্রই বৃদ্ধি পাবে। কেননা কক্সবাজার বিমানবন্দর এবং যশোর বিমানবন্দর আধুনিকায়ন করে নতুন প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে উন্নত এবং আধুনিক বিমানবন্দরে রূপান্তরিত করা হবে। এই দুটি বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালিত হলে বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক রুট হবে সর্বমোট ২৩ টি। ধন্যবাদ।

FAQs (Frequently Asked Questions)

বাংলাদেশ বিমানের কোন রুটটি সবচেয়ে ব্যস্ত?

বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা থেকে জেদ্দা রুটটি সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততম রুট হিসেবে বিবেচিত হয়।

বাংলাদেশ বিমানের জেদ্দা রুটে সপ্তাহে কয়টি ফ্লাইট চলে?

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রতি সপ্তাহে জেদ্দা রুটে সর্বমোট প্রায় ৫ টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

ঢাকা থেকে কতটি দেশে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট রয়েছে?

বর্তমানে ঢাকা থেকে সর্বমোট প্রায় ১৫টি দেশে বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইট পরিচালনা করে।

বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে লন্ডন থেকে ঢাকায় আসতে কত সময় লাগে?

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ব্যবহার করে লন্ডন থেকে ঢাকা আসতে প্রায় প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় লাগে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইটে কি ডিসকাউন্ট থাকে?

হ্যাঁ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে টিকেট বুকিং করলে সময় অনুযায়ী ৫% থেকে ১৫ পার্সেন্ট পর্যন্ত ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়।

Leave a Comment

Scroll to Top