দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন সেক্টরে কাজ রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি তা মূলত কাজের সেক্টর অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। যেমন-
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া বিল্ডিং ও কনস্ট্রাকশন (Construction) সেক্টরে নির্মাণ শ্রমিক এবং সাইট ম্যানেজার সহ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের চাহিদা বেশি হয়ে থাকে।
তবে দক্ষিণ কোরিয়া পর্যটন সেক্টরে হোটেল ম্যানেজমেন্ট এবং রেস্টুরেন্ট স্টাফ সহ ওয়েটার এবং রাঁধুনী বা সেফ দের চাহিদা অন্যান্য কাজের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরে ওয়েব ডেভেলপার এবং ডিজাইন সেক্টরে ওয়েব ডিজাইনার সহ গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং গেম ডেভেলপারের চাহিদা বেশি হয়ে থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি তা ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরের ক্ষেত্রে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সহ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের চাহিদা বেশি।
অপর দিকে দক্ষিণ কোরিয়া গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) সেক্টরে বায়োটেকনোলজি এবং শিক্ষা (Education) সেক্টরে ইংরেজি ভাষার শিক্ষকের (ESL) চাহিদা তুলনামূলক বেশি।
এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা (Healthcare) সেক্টরের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া নার্স কেয়ারগিভার এবং ডাক্তারের চাহিদা অন্যান্য কাজের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়া বেতন কত
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া কাজের বেতন কাজের ধরন অনুযায়ী সর্বনিম্ন প্রায় ৭০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
তবে অভিজ্ঞদের বেতন বেশি দেওয়া হয়। দক্ষিণ কোরিয়া একজন অভিজ্ঞ শ্রমিক ন্যূনতম প্রায় ৩০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি বেতন পেয়ে থাকে।
অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়া একজন অভিজ্ঞ শ্রমিকের বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ১ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ২ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ থেকে কোরিয়া যাওয়ার নিয়ম
কয়েকটি মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া যায়। তবে এর মধ্যে সব থেকে উত্তম এবং নির্ভরযোগ্য উপায় হল ইপিএস (EPS) প্রোগ্রামের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া।
ইপিএস বা Employment Permit System প্রোগ্রাম মূলত বাংলাদেশী শ্রমিকদের দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার সরকার স্বীকৃত একটি বৈধ এবং নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি।
এক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে EPS-TOPIK পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করতে হবে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দক্ষতা যাচাই এবং মেডিকেল চেকআপ সম্পন্ন করে ভিসা (E-9) সংগ্রহ করার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া লটারি
দক্ষিণ কোরিয়ার ইপিএস (Employment Permit System) প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে লটারি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে বোয়েসেল (BOESL) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হলে নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রার্থী লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়।
নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা বোয়েসেল (BOESL) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। বোয়েসেল এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সাধারণত বিকাশ বা অন্যান্য মাধ্যমে ৫০০ টাকা ফি প্রদান করতে হয়।
দক্ষিণ কোরিয়া লটারি আবেদন
বোয়েসেল (BOESL) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদনকৃত প্রার্থীদের মধ্য থেকে নির্বাচিত প্রার্থীদের চূড়ান্ত নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হয়।
এক্ষেত্রে বোয়েসেল (BOESL) এর নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়। যা সাধারণত ৩ হাজার টাকা থেকে ৩২০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় (EPS-TOPIK) উত্তীর্ণ হলে দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়।
দক্ষিণ কোরিয়া লটারি ২০২৫ কবে ছাড়বে
সাধারণত দক্ষিণ কোরিয়ার ই পি এস (Employment Permit System) কর্মসূচির আওতায় ২০২৫ সালে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া খুব শীঘ্রই চালু করা হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া লটারি ২০২৫ কবে ছাড়বে তা জানতে বোয়েসেল (BOESL) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://boesl.gov.bd/ নিয়মিত ভিজিট করে আপডেট তথ্য যাচাই করতে হবে।
কোরিয়ান লটারি রেজাল্ট চেক
অনলাইনের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ান লটারি রেজাল্ট চেক করা যায়। এক্ষেত্রে বোয়েসেল (BOESL) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে https://boesl.gov.bd/ প্রবেশ করতে হবে।
অতঃপর লটারি ফলাফল (Lottery Result) অপশনে ক্লিক করে পাসপোর্ট নম্বর বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য প্রদান করে লটারির রেজাল্ট চেক করতে হবে।
শেষ কথা
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি হবে তা সাধারণত লোকেশনের উপর নির্ভর করে। দক্ষিণ কোরিয়া দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। তাই দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা আবেদনের পূর্বে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্ধারিত কাজে দক্ষতা অর্জন করে দক্ষ শ্রমিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। ধন্যবাদ।
FAQs (Frequently Asked Questions)
দক্ষিণ কোরিয়া কৃষি কাজের বেতন কত?
সাধারণত দক্ষিণ কোরিয়া কৃষি কাজের বেতন নূন্যতম প্রায় ১ লাখ টাকা থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত?
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের প্রায় ০.০৮৩ টাকা।
দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রার নাম কি?
দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রার নাম কোরিয়ান ওন (KRW)।
বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত সময় লাগে?
বিমানের ফ্লাইটের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে প্রায় ৫ ঘন্টা থেকে ২০ ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগে।
কোরিয়া লটারি ২০২৫ আবেদন কবে ছাড়বে?
দক্ষিণ কোরিয়া লটারি ২০২৫ সালে কবে ছাড়বে তা বোয়েসেল (BOESL) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
লটারি ছাড়া কোরিয়া যাওয়ার উপায়?
লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ান ভিসা (E-7), (D-2), (D-8), (C-3) এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া যায়।